চট্টগ্রাম জেলার বাশঁখালী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক
জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি
স্থান |
: |
অফিসার্স ক্লাব হল রুম, বাশঁখালী, চট্টগ্রাম। |
তারিখ |
: |
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি. |
সময় |
: |
সকাল-১১:০০ ঘটিকা |
প্রতিবেদন
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিটি বাশঁখালী উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অফিসার্স ক্লাব হল রুম, বাশঁখালী, চট্টগ্রামে গত ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি.তারিখ রোজ-সোমবার সকাল-১১:০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়। বাশঁখালী উপজেলা শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) জনাব সৈয়দ আবু সুফিয়ান মহোদয়ের সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব জেসমিন আক্তার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বাশঁখালী, চট্টগ্রাম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনাব মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম,নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা,চট্টগ্রাম। এছাড়া উক্ত কর্মসুচীতে জেলা কার্যালয়ের নমুনা সংগ্রহ সহকারী,অফিস সহায়ক সার্বিকভাবে সহযোগীতা করেন।
কর্মসূচিটির শুরুতেই বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম,নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা,চট্টগ্রাম। প্রথমে তিনি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম তুলে ধরেন। ধরেন। তিনি মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সমূহ আলোচনা করেন যা সকলের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে। অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণে দীর্ঘস্থায়ী ডায়বেটিক, কিডনি রোগ, ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেশি থাকে। ফাস্ট ফুডের মাংসে সোডিয়াম নাইট্রেট এবং সোডিয়াম নাইট্রাইট ব্যবহার করা হয় যা দীর্ঘদিন খাবার গ্রহণের ফলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া ফাস্টফুড এর কারণে ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়া, কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, দাঁতের ক্ষয়, ইত্যাদি স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। কাঁচা ও রান্না করা খাবার আলাদা রাখার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। ফ্রিজে খাদ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি ও ফ্রিজিং তাপমাত্রা বিষয়ে আলোকপাত করেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি ফুচকা, পানিপুরি, বেলপুরি, ললিপপ, আইসক্রিম জাতীয় খাবার যা শিশুরা বেশী পছন্দ করে, ঐ জাতীয় খাবার শিশূদের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা তিনি আলোচনার মাধ্যমে সকলকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। খোলা খাবার, পথ খাবার এবং অনিরাপদ রং মিশ্রিত খাবার খাওয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। তিনি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান যে, নিজেদের বিদ্যালয়ের সামনে গড়ে উঠা অনিরাপদ পথ খাবার গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা অথবা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রামকে তথ্য প্রদান করে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা । তিনি নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এর ধারাসমূহ বর্ণনা করেন ও আইন অবমাননায় দন্ডসমূহ উল্লেখ করেন। পরিশেষে তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন যে, খাবার খেলেই হবে না, খাবারটি নিরাপদ এবং পুষ্টিকর কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য সকলকে সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে । সকলের সার্বিক মঙ্গল কামনা করে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।
এরপর কর্মসূচিটিতে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি জনাব জেসমিন আক্তার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বাশঁখালী, চট্টগ্রাম। তিনি এই ধরনের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে সম্মানিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পৃক্ত করার জন্য চট্টগ্রাম জেলার নিরাপদ খাদ্য অফিসার ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কে ধন্যবাদ জানান । তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় খাদ্যের চেয়ে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা অনেক বেশি জরুরি। বর্তমানে খাদ্যের নিরাপদতা নিয়ে আমাদের নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে । কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সামান্য কিছু মুনাফার জন্য এই খাবারকে নীরব ঘাতকে পরিণত করছে । যা সকল সাধারণ নাগরিকের অবগত হওয়া প্রয়োজন । এই ধরনের অপকর্মগুলোকে সমাজের মাঝে তুলে ধরতে সম্মানিত শিক্ষক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। একটি উন্নত সমাজ গড়ার পিছনে আমাদের সম্মানিত শিক্ষকগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে । কারণ তারাই হলেন উন্নত দেশ গড়ার কান্ডারী । তাই সকল শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বাইরের খোলা খাবার গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন । সেমিনারে প্রধান অতিথি তার বক্তব্য দীর্ঘায়িত না করে সকলকে নিরাপদ খাদ্য আইন,২০১৩ অনুসরণ ও জেলার নিরাপদ খাদ্য অফিসারকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আহবান প্রদান করে বক্তব্য শেষ করেন ।
অনুষ্ঠানের শেষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সভাপতি জনাব সৈয়দ আবু সুফিয়ান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত), বাশঁখালী, চট্টগ্রাম। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।তিনি প্রাত্যহিক সমাবেশে নিয়মিত নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে নিরাপদ ব্রিফিং প্রদান করার পরামর্শ প্রদান করেন। খাদ্য নিশ্চিতে চট্টগ্রামের বাশঁখালী উপজেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রচারণা বাড়ানোর নির্দেশ প্রদান। তিনি মনে করেন শিক্ষার্থীদের শুরু থেকে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সম্মুখ ধারণা প্রদান করা গেলে তারা নিজেরা সচেতন হওয়ায় পাশাপাশি পরিবার ও অন্যদের সতর্ক করতে পারবে। তিনি প্রতিটি বিদ্যালয়ের সামনের গড়ে উঠা অনিরাপদ খাদ্য বিক্রেতাদের নিরাপদ উপায়ে খাদ্য বিক্রয় করার জন্য প্রধান শিক্ষকদের ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা প্রদান করেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, নিরাপদ উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করা, প্রয়োজনে পানি ফুটিয়ে খাওয়া এবং ফলমূল ও শাক-সবজি ধুয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
সেমিনারে জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার জনাব মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম উপস্থিত সকল শিক্ষকদের মাঝে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিভিন্ন লিফলেট ও পোস্টার, কলম, প্যাড এবং নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকা বিতরণের মাধ্যমে কার্যক্রম সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS