চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক
জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি
স্থান |
: |
উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম। |
তারিখ |
: |
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি. |
সময় |
: |
সকাল-১০:০০ ঘটিকা |
প্রতিবেদন
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিটি সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রি. তারিখ রোজ-মঙ্গলবার সকাল-১০:০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়। সাতকানিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মো: গোলাম মাহবুব মহোদয়ের সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মিল্টন বিশ্বাস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনাব মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম,নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা,চট্টগ্রাম।এছাড়া উক্ত কর্মসুচীতে সাতকানিয়া উপজেলার নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক,জেলা কার্যালয়ের নমুনা সংগ্রহকারী,অফিস সহায়ক সার্বিকভাবে সহযোগীতা করেন।
কর্মসূচিটির শুরুতেই বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম,নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা,চট্টগ্রাম। প্রথমে তিনি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সমূহ আলোচনা করেন যা সকলের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণে দীর্ঘস্থায়ী ডায়বেটিস, কিডনি রোগ, ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেশি থাকে। তিনি উপস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে জানান যে, অনিরাপদ খাদ্যাভাস সকলকে ত্যাগ করতে হবে। জাঙ্ক ফুড, পথ খাবার, খোলা খাবার গ্রহণে ক্যান্সার, কিডনিজনিত সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। এসকল খাবার ত্যাগ করে ঘরের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তিনি সাতকানিয়া উপজেলায় উপস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকমন্ডলীকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পাঠদানের পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের মানুষ অপুষ্টি এবং অনিরাপদ খাদ্য সমস্যায় ভুগছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ব্যাপক প্রচারণা প্রয়োজন। নিরাপদ খাদ্য এবং পুষ্টি সম্পর্কে মানুষকে সঠিক ধারণা প্রদান করতে হবে। এরই প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং আয়োজন করে প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে সঠিক ধারণা প্রদান করতে হবে।
এরপর কর্মসূচিটিতে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি জনাব মিল্টন বিশ্বাস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম। তিনি এই ধরনের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে সম্মানিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পৃক্ত করার জন্য চট্টগ্রাম জেলার নিরাপদ খাদ্য অফিসার ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কে ধন্যবাদ জানান । তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় খাদ্যের চেয়ে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা অনেক বেশি জরুরি। বর্তমানে খাদ্যের নিরাপদতা নিয়ে আমাদের নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে । কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সামান্য কিছু মুনাফার জন্য এই খাবারকে নীরব ঘাতকে পরিণত করছে । যা সকল সাধারণ নাগরিকের অবগত হওয়া প্রয়োজন । এই ধরনের অপকর্মগুলোকে সমাজের মাঝে তুলে ধরতে সম্মানিত শিক্ষক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। একটি উন্নত সমাজ গড়ার পিছনে আমাদের সম্মানিত শিক্ষকগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে । কারণ তারাই হলেন উন্নত দেশ গড়ার কান্ডারী । তাই সকল শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বাইরের খোলা খাবার গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন । সেমিনারে প্রধান অতিথি তার বক্তব্য দীর্ঘায়িত না করে সকলকে নিরাপদ খাদ্য আইন,২০১৩ অনুসরণ ও জেলার নিরাপদ খাদ্য অফিসারকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আহবান প্রদান করে বক্তব্য শেষ করেন ।
অনুষ্ঠানের শেষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সভাপতি জনাব মো: গোলাম মাহবুব, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রচারণা বাড়ানোর নির্দেশ প্রদান। তিনি মনে করেন শিক্ষার্থীদের শুরু থেকে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সম্মুখ ধারণা প্রদান করা গেলে তারা নিজেরা সচেতন হওয়ায় পাশাপাশি পরিবার ও অন্যদের সতর্ক করতে পারবে। তিনি প্রতিটি বিদ্যালয়ের সামনের গড়ে উঠা অনিরাপদ খাদ্য বিক্রেতাদের নিরাপদ উপায়ে খাদ্য বিক্রয় করার জন্য প্রধান শিক্ষকদের ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা প্রদান করেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, নিরাপদ উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করা, প্রয়োজনে পানি ফুটিয়ে খাওয়া এবং ফলমূল ও শাক-সবজি ধুয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS