শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মসুচীর প্রতিবেদন
স্থান: হযরত কালুশাহ (রহ:) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সিতাকুন্ড, চট্টগ্রাম।
তারিখ: ২৩ মে ২০২৪ খ্রি.
সময়: সকাল- ১২:০০ ঘটিকায় ।
আয়োজনে: বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম ।
গদ ২৩ মে ২০২৪ খ্রি তারিখে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সিতাকুন্ড উপজেলার হযরত কালুশাহ (রহ:) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীদের মাঝে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। এই মুল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার জনাব মুহাম্মদ ফারহান ইসলাম এবং সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার, বায়োজিদ বোস্তামী, চট্টগ্রাম। আরো উপস্থিত ছিলেন অত্র বিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ।
সামগ্রিক কার্যক্রমঃ
সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে খাদ্য নিরাপদতা বিষয়ে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা জনাব মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম। খাদ্য নিরাপদতার যাবতীয় তথ্যাদি উপস্থাপন করার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপদতার বিভিন্ন আইন ও বিধি বিধান তুলে ধরেন। সকাল ১২.০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই সেমিনারে সভাপতি স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে, শিক্ষার্থীদের খাদ্য নিরাপদতার বিভিন্ন দিক আলোচনা করেন নিরাপদ খাদ্য অফিসার, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম। আলোচ্য বিষয় সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
১. বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠনের সংক্ষিপ্ত পটভূমি ও কর্তৃপক্ষের সার্বিক কার্যাবলী বিবরণ।
২. খাদ্য ভেজাল ও দূষণ সম্পর্কিত মৌলিক আলোচনা
৩. খাদ্য দূষণের বিভিন্ন কারণ ও দূষণ প্রতিকারের উপায়
৪. খাদ্য নিরাপদতা অর্জনে পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা।
৫. অনিরাপদ খাবার গ্রহণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাব
৬. খাদ্য শৃঙ্খলে কীটনাশক, বালাইনাশক, ভারী ধাতু ও অন্যান্য দূষকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত বা
প্রভাব হ্রাস করার বিভিন্ন বিজ্ঞানসম্মত উপায়।
৭. শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয় ও এর আশেপাশের এলাকায় প্রস্তুতকৃত পথ খাবার বা ষ্ট্রীট ফুডের নিরাপদতা
বিষয়ক প্রাথমিক ধারণা।
৮. স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাটের উৎস ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে আলোচনা ।
৯. স্বুস্থ্য-সবল জাতি গঠনে নিরাপদ খাদ্যের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয় ।
প্রচলিত কিছু দূষণ সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক বলেনঃ-
হলুদে লেড ক্রোমেট
মরিচের গুড়ায় ইটের গুড়া
আইসক্রিম এ কৃত্রিম রঙ
পোলাও/বিরিয়ানিতে রঙ
খাবার রাখার ক্ষেত্রে ফুড গ্রেড প্লাস্টিক ব্যবহার না করা
খাবার রান্নার ক্ষেত্রে টেস্টিং সল্ট এর ব্যবহার
ফরমালিন দিয়ে মাছকে তাজা রাখা
চা পাতাকে বেশিক্ষন সিদ্ধ করা।
এগুলো মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
শিক্ষার্থীদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনায় সভাপতি বলেনঃ-
১। অতিরিক্ত রঙিন ও রঙযুক্ত খাবার পরিহার
২। বাইরে খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপদ পানি পান নিশ্চিত করা
৩। তেলে ভাজা খাবার পরিহার করা। (অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবারে ট্রান্সফ্যাট থাকে-২% এর নিচে নির্ধারন করা হয়েছে)
৪। যথাসম্ভব নিজ ঘরে প্রস্তুতকৃত খাবার গ্রহন করা।
৫। সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া।
৬। সঠিক তাপমাত্রায় খাবার সংরক্ষনের ব্যাপারে নিজেরা সচেতন হওয়া।
৭। নিয়মিত ফলমূল ও শাক সবজি খাওয়া (ভিটামিন আছে ও পেট পরিস্কার থাকবে)
৮। নিয়মিত খেলাধুলা করা ও অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসা
৯। রাস্তাঘাটে বিক্রি করা খোলা শরবত না খাওয়া।
১০। বাইরে খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপদ পানি পান নিশ্চিত করা।
১১। কালিযুক্ত কাগজে পরিবেশনকৃত খাবার পরিহার করা।
কোনো খাদ্য ব্যবসায়ী এই নিম্নমানের ক্ষতিকর রং ব্যবহার করলে সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সবাইকে অবহিত করেন।
প্রধান শিক্ষক, হযরত কালুশাহ (রহ:) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সিতাকুন্ড, চট্টগ্রাম শিক্ষার্থীদের জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপের জন্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন। একই সাথে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে খাদ্য নিরাপদতা বিষয়ে আরও সচেতন ও সজাগ থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন। এমন অর্থবহ ও গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস