খাদ্যব্যবসা সংশ্লিষ্টদের নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণের প্রতিবেদন
গত ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫খ্রি.তারিখ রোজ মঙ্গলবার সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় পটিয়া উপজেলার খাদ্য ব্যবসা সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন, পটিয়া, চট্টগ্রামে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ।
উক্ত প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ফারহানুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পটিয়া এবং মুল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম, জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার, চট্টগ্রাম।
প্রশিক্ষণের শুরুতে জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার জনাব মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম সবার সাথে পরিচয় পর্ব সম্পন্ন করেন । এরপর তিনি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন কর্মকান্ড এবং নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন। এরপর মূল আলোচনায় নিরাপদ খাদ্য অফিসার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, খাদ্যের সংরক্ষণ, খাদ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সচেতনতা, খাদ্যপন্য মোড়কীকরণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন; এ ছাড়াও খাদ্য নিরাপদতা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় স্লাইডের মাধ্যমে প্রদর্শন করেন এবং নিরাপদ খাদ্য আইন ১৩(২) ধারা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন । উক্ত প্রশিক্ষণে খাদ্য ব্যবসায়ীরা তাদের নিজস্ব মতামত, অভিজ্ঞতা ও সমস্যা তুলে ধরেন; জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার তাদের মতামতগুলো মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রধান করেন। তিনি আরো বলেন, খাদ্য অনিরাপদ হওয়ার কারণেই মানুষ বেশি অসুস্থ্য হয় এবং হাসপাতালে দিনদিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা, পোড়াতেলের ব্যবহার ও ক্ষতিকর প্রভাব, ফলের পুষ্টিগুণ এবং খাদ্য প্রস্তুতিতে অনুজীবীয় দূষক ও এর প্রতিকার ইত্যাদি বিষয়ে তিনি বিশদ আলোচনা করেন। যে খাদ্য আমরা খাই না তা আমরা মানুষকেও খাওয়াবো না। এই প্রতিজ্ঞা মাথায় রেখে তিনি সকল খাদ্য কর্মীদের কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এরপর বক্তব্য রাখেন জনাব ফারহানুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পটিয়া, চট্টগ্রাম। তিনি বলেন,সবাইকে সবার জায়গা থেকে নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তিকে এক সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে। যেখানেই অনিয়ম দেখবে সাথে সাথে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এর প্রধান কারণ অনিরাপদ খাদ্য। তাই খাদ্যে ভেজাল কোনভাবেই সহ্য করার মত নয়। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে তিনি আহ্বান জানান। সাবাই ব্যবসা করুক কিন্ত আইন মেনে। মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোন কিছুই বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, খাদ্য বা খাদ্যপোকরণ উন্মুক্ত রাখলে তা ধূলা-বালি, পোকামাকড় বা মাছির মাধ্যমে নানা ধরনের রোগ জীবানু দ্বারা অনিরাপদ হতে পারে সুতরাং সকল প্রকার খাদ্য ও খাদ্যপোকরণ স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ঢেকে রাখুন।খাদ্য তৈরিতে অননুমোদিত রঞ্জক, সুগন্ধি বা অন্যান্য সংযোজন দ্রব্য ব্যবহার করলে মানবদেহে রাসায়নিক দূষকজনিত বিষক্রিয়া হতে পারে। বাসি বা পচা খাদ্য সামগ্রী ব্যবহার বা বিক্রি করলে অণুজীব ঘটিত বিষক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। ভাজা বা রান্না করা খাবার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় দুই ঘন্টার বেশি থাকলে অনিরাপদ হতে পারে। শরবত বা পানীয় তৈরিতে শুধুমাত্র নিরাপদ পানি, নিরাপদ পানিতে তৈরি বরফ, অনুমোদিত রঞ্জক ও সুগন্ধিকারক, অনুমোদিত মাত্রায় মিস্টিকারক ব্যবহার করার পরামর্শ প্রদান করেন। খাদ্য সামগ্রী তৈরি ও বিক্রয়ের জন্য নিয়োজিত খাদ্যকর্মীগন সংক্রামক রোগমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন, এপ্রন, মাথায় চুল ঢাকার ক্যাপ ও হ্যান্ড গ্লোবস পরিধান করার পরামর্শ প্রদান করেন।তিনি সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতে খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবেশনের সাথে জড়িত সকলকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়ার বিষয়ে অনুরোধ জানান। কোনো খাদ্য ব্যবসায়ী এই নিম্নমানের ক্ষতিকর রং ব্যবহার করলে সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সবাইকে অবহিত করেন।
পরিশেষে নিরাপদ খাদ্য অফিসার খাদ্যকর্মীদের স্বত:স্ফূর্তভাবে খাদ্য নিরাপদতা বিষয়ক কর্মসূচি উপভোগ করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস