খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবেশন বিষয়ে খাদ্যের নিরাপদতা শীর্ষক “উঠান বৈঠক” এর প্রতিবেদন
স্থান: জামালপারা গ্রাম,কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম।
তারিখ: ২৩/০৯/২০২৩ খ্রি:
সময় : বিকাল ৩.০০ ঘটিকা
নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ মেনে খাদ্য উৎপাদন,সংরক্ষণ ,প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবেশন বিষয়ে খাদ্যের নিরাপদতা সম্পর্কিত জ্ঞান লাভ ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্র্রামের কর্ণফুলী উপজেলার জামালপারা গ্রামের মহিলাদের নিয়ে সচেতনতামূলক একটি উঠান বৈঠক আয়োজন করা হয়। উক্ত বৈঠকের মুল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলার নিরাপদ খাদ্য অফিসার জনাব মুহাম্মদ ফারহান ইসলাম। এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মনোয়ারা বেগম, দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক,কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন জনাব মনোয়ারা বেগম, দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক,কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম। তিনি তার আলোচনায় গৃহিনীদের ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও খাদ্য নিরাপদ রাখার ৫টি চাবিকাঠি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাছাড়া খাদ্যের উৎপাদন,সংরক্ষণ ,প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবেশন বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন,আমরা প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠী। ঢাকা বা চট্টগ্রাম শহরের মত উন্নত চিকিৎসা সুবিধা এইখানে নেই। তাই আমাদের পরিবারের কোন সদস্য অসুখে আক্রান্ত হলে আমরা খুবই চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। কিন্তু আমরা যদি একটিু সচেতন হই তাহলে আমাদের অসুস্থ্যতার হার অনেক কমে আসবে। একজন যত্নশীল মা একজন আদর্শ সন্তান গড়ে তুলতে পারে। তাই এই উঠান বৈঠকে তিনি প্রতিটি গৃহিনীকে আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।
অত:পর অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন মূল আলোচক জনাব মুহাম্মদ ফারহান ইসলাম, নিরাপদ খাদ্য অফিসার, চট্টগ্রাম। তিনি বলেন, আমরা যে টাকা আয় করি তার বেশিরভাগই ঔষধের পিছনে ব্যয় করি। দিন দিন ঔষধ আমাদের খাবারে পরিণত হচ্ছে। কারণ ,আমাদের অসচেতনতার কারণে আমরা প্রায়ই অসুখে পড়ি। অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া ও রান্নার অসচেতনতা ইত্যাদির কারণে রান্না করা খাবার তার পুষ্টিমান হারিয়ে ফেলে এবং তা শরীরের জন্য বিভিন্ন হানিকারক রোগ বয়ে নিয়ে আসে যেমন:-গ্যাস্ট্রিক, আলসার, কিডনীরোগ, লিভার সমস্যা ইত্যাদি। তিনি আরো বলেন, এই সমস্যায় শুধু আমরা ভুক্তভোগী নয়, আগামী প্রজন্ম ও এই ভয়াবহ রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে অটিজম শিশুর জন্মের কারণ হিসেবে তিনি অনিরাপদ ও ভেজাল খাবারকে দায়ী করে বলেন কারো অভিশাপের কারণে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হয় না। তাই গৃহিনীদের আরো সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে বর্তমানে বেকারি ও শিশু খাদ্য বেশির ভাগই স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। ফ্রিজে খাবার রাখার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি ফ্রিজে কাচাঁ ও রান্না করা খাবার যাতে আলাদা করে রাখে সে ব্যাপারে বিশেষ তাগিদ দেন। তার পর শুটকিতে ক্যানসার রোগের জন্য দায়ী রাসায়নিক এবং এর ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করে তিনি বাসায় তৈরি শুটকি গ্রহণের পরামর্শ দেন। ফলমূলে ফরমালিন সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ফলমূলে কিছু ফরমালিন প্রাকৃতিকভাবেই থাকে । তাই ফরমালিনের ভয়ে ফলমূল খাওয়া যাবে না এই ভয় থেকে বের হয়ে তিনি বিশুদ্ধ চলমান পানিতে ফলমূল ভালো করে ধুয়ে খাবার পরামর্শ দেন উপস্থিত গৃহিনীদের। এরপর তিনি সকলকে সচেতনতামূলক লিফলেট ও পোস্টার তুলে দেন এবং সকলের সু-স্বাস্থ্য কামনা করে উক্ত বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উদ্দেশ্য :
০১। নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা।
০২। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে গৃহিনীদের ধারণা প্রদান করা।
০৩। খাদ্য অনিরাপদ হওয়ার কারণ ও এর থেকে প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা।
০৪। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ ও সুস্থ্ রাখতে একজন মা বা গৃহিণীর করণীয় সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা।
পর্যালোচনা:
উপস্থিত সকলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এই ধরণের কর্মসূচীকে সাধুবাদ জানান।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস